‘ঝুলন্ত কবরস্থান’ নামটি শুনেই গা হিম হিম করছে, তাই না? মনে হচ্ছে এটা আবার কোন কবরস্থান? মানুষের নাকি ভুতের? নাকি কোনো সিনেমার কথা বলছি আমি?
না, একদমই কোনো সিনেমার কথা নয় এটা। আবার ভুতেদেরও কবরস্থান নয় এটা। ‘মানুষ মরলে ভুত হয়’ এটা অনেকে বিশ্বাস করে। কিন্তু ভুতও আবার মরে নাকি?
তাহলে বন্ধুরা বুঝতেই পারছ যে এটা কোনো সিনামা নয়, নয় কোনো ভুতেদের কবরস্থান। তবে কি এটা মানুষেরই কবরস্থান? সম্পূর্ণ আর্টিকেলটা পড়, তাহলে সব বুঝতে পারবে।
মানুষ মরার পড় তার দেহ সৎকার করতে হয়। একেক ধর্মে একেকভাবে সৎকার করা হয় মৃত দেহকে। ইসলাম ধর্মে মানুষ মারা গেলে তাকে জানাজার নামাজ পড়ানো হয়। তারপর তাকে কবরে দাফন করানো হয়। হিন্দুদেরকে পুড়িয়ে ফেলা হয়। এভাবে কাউকে পুড়িয়ে, কাউকে মাটিতে শুইয়ে, কাউকে বা মাটিতে বসিয়ে কবর দেওয়া হয়।
মিশরে আবার প্রাচীনকাল থেকেই কফিন ব্যাবহার করা হয়। কফিনে শুইয়ে মৃতকে মমি করে রাখা হয়।
কিন্তু তাই বলে কবর ঝুলিয়ে রাখবে? এমন ঘটনা কি সত্যিই সত্য?
হ্যাঁ। ফিলিপাইন দেশ। উত্তরাঞ্চলীয় ফিলিপাইন দেশের মাউন্টেন প্রদেশ। এখানে প্রাচীনকাল থেকেই বাস করে ‘ইগোরোট’ গোত্রের সদস্যরা।
দীর্ঘদিন ধরে তারা মৃতকে ঝুলিয়ে দাফন করে আসছে। এটা তাদের বহু বছরের ঐতিহ্য। পাহাড়ের নির্দিষ্ট উচ্চতায় মাটির যে উপরের অংশগুলো থাকে তাতে পেরেক মেরে কফিনগুলো আটকিয়ে রাখা হয়।
কিন্তু তারা এমন কেন করে? এর পিছনে কি কারণ রয়েছে?
চলুন দেখে নিই সেসব কারণ।
১। তারা মনে করে উচু স্থানে থাকলে মৃতরা অনেক আরামদায়ক স্থানে থাকবে।
২। মৃতদের প্রতি সম্মান দেখানর জন্য।
৩। পাহাড়ের উপরে থাকলে মৃতদের আত্মা তাদের অনেক কাছে বিদ্যমান থাকবে।
৪। কুকুর- শেয়ালের মাটি খুড়ে হাড় বের করা থেকে বিরত রাখা যাবে।
৫। আরেকটা বড় কারণ হলো প্রাচীনকালে কয়েক বছর ধরে কালিঙ্গা এবং পূর্ব বন্টোক প্রদেশের বর্বর শত্রুদের হাত থেকে তাদের মৃতদের বাঁচানোর জন্য। এসব বর্বর জনগোষ্ঠী মৃতদের কবর খুড়ে মাথার খুলি নিয়ে যেত তাদের খেলার বিজয়ীদের ট্রফি হিসেবে দিতে।
এসব কারণেই মূলত ইগোরোট গোত্র এমনটা করে।
এটা করে তারা মনে করে তারা তাদের মৃতদের স্বর্গে পৌঁছিয়ে দিয়েছে।
তাদের দাফনের স্টাইলও সেই রকমের।
লাশটিকে কাঠের খাটিয়ায় রেখে বেত দিয়ে বেধে কম্বল দিয়ে আবৃত করা হয়, আর লাশের পচা গন্ধ দূর করার জন্য ধূমপান করা হয়। কি আজব ব্যাপার।
এরপর কয়েকদিন ধরে অনুষ্ঠান করে মিছিল সহকারে পাহাড়ে লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পাহাড়ে উঠে যুবকরা কফিমটিকে পাহাড়ের সাথে পেরেক মেরে আটকে দেয়।
তো বন্ধুরা কেমন লাগলো আজকের এই ঝুলন্ত কবরস্থান?
কমেন্ট করে জানিয়ে দিও।
আর এরকম অজানা তথ্য পেতে আমাদের ব্লগটিকে Follow কর।
ধন্যবাদ।
1 মন্তব্যসমূহ
বাপের জন্মেও দেখিনি এরকম কবর।
উত্তরমুছুন